Dhaka , Tuesday, 2 September 2025
News Title :
মুক্তির পথ স্বেচ্ছাসেবী ফাউন্ডেশন এর উদ্যোগে বৈদিক স্কুল প্রতিষ্ঠা ও গীতা বিতরণ কর্মসূচি দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গে তালা সেচ্ছাসেবক দলের নেতা রফিকুল ইসলামের পদ স্থগিত তালায় বন প্রহরির  ইউনুস আলীর বিরুদ্ধে বন্যা নিয়ন্ত্রন বাঁধের গাছ বিক্রির অভিযোগ সড়ক পথে সুন্দরবনের ৬২ কি.মি সড়ক খানা খন্দ : ভোগান্তিতে ১৫ লাখ মানুষ মুক্তিযুদ্ধের সর্বাধিনায়ক জেনারেল ওসমানীর ১০৭ তম জন্মবার্ষিকী আজ তালায় স্বেচ্ছাসেবক দলের আহবায়কের বিরুদ্ধে সংখ্যালঘুদের জমি দখলের অভিযোগ নিহত বিএনপি নেতার মেয়ের বিয়ে আনুষ্ঠানিকতা সম্পন্ন করলেন তারেক রহমান ডুমুরিয়া অনলাইন জুয়ার ফাঁদে দেনার-দায়ে আত্মহত্যা স্কুল শিক্ষকের টানা তিন মাস পর উন্মুক্ত হচ্ছে সুন্দরবন :উপকূলে আনন্দের জোয়ার বিষ্ণুপুর ইউনিয়ন বিএনপির কাউন্সিলে দুয়ারে দুয়ারে প্রার্থীরা: লড়াই হবে হাড্ডাহাড্ডি

সড়ক পথে সুন্দরবনের ৬২ কি.মি সড়ক খানা খন্দ : ভোগান্তিতে ১৫ লাখ মানুষ

নিজস্ব প্রতিবেদক:
সাতক্ষীরার অন্যতম আকর্ষণ সড়ক পথে সুন্দরবন।
বিশ্ব ঐতিহ্যর সুন্দরবন একমাত্র সড়ক পথে যাওয়া যায় সাতক্ষীরা হয়ে। সাতক্ষীরা শহর থেকে ৬২ কিলোমিটার পাড়ি দিয়ে সদর, দেবহাটা, কালিগঞ্জ,শ্যামনগর, মুন্সিগঞ্জ হয়ে বুড়িগোয়ালিনী শেষ সড়ক। সেখান থেকে খোলপেটুয়া নদী হয়ে সুন্দরবন। ট্রলার, স্পীড বোট করে গহীন অরণ্য সুন্দরবনে নৈগাশিক সৌন্দর্য আপনি উপভোগ করতে পারবেন।

সুন্দরবনের এই দীর্ঘ ৬২ কিলোমিটার সড়কটি জরাজীর্ণ, খানাখন্দ,ছোট বড় গর্ত মিলে চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। সড়কের বেহাল দশার কারণে প্রতিনয়ত ছোট খাটো দুর্ঘটনা ঘটছে। সুন্দরবনগামী দেশি বিদেশী পর্যটকরা সড়কের বেহাল দশার কারণে সড়ক পথে পরিহার করে মংলা হয়ে সুন্দরবনে ঝুঁকছে। মংলা হয়ে নদী পথের দীর্ঘ সময় লাগার কারণে সুন্দরবন পরিহার করছে পর্যটকরা এতে পর্যটন শিল্পে ধস নামছে।

সাতক্ষীরার আঞ্চলিক মহাসড়ক সাতক্ষীরা থেকে শ্যামনগরের মুন্সিগঞ্জ পর্যন্ত দীর্ঘ ৬২ কিলোমিটার সড়কটি দীর্ঘ এক যুগেও সংস্কার হয়নি। ফলে তিনটি উপজেলা কালিগঞ্জ,শ্যামনগর, দেবহাটা ও সদরের একাংশের প্রায় ১৫ লাখ মানুষ ভোগান্তিতে পড়ছেন। সড়কে বড় বড় গর্ত ও খানাখন্দে ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে ছোট যানবাহন গুলো । এর ফলে সুন্দরবনে পর্যটক আগমন কমছে, যা রাজস্ব আয়েও নেতিবাচক প্রভাব ফেলছে। ব্যবসা-বাণিজ্যও ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে।

‘সাতক্ষীরার প্রধান আকর্ষণ, সড়ক পথে সুন্দরবন’ স্লোগান থাকা সত্ত্বেও সাতক্ষীরা-শ্যামনগর সড়কের বেহাল দশা লেগে আছে। এই সড়কটি সংস্কারের সড়ক ও জনপদের গাফিলতি রয়েছে। যার ফলে দীর্ঘ এক যুগ ভোগান্তি পাড়ি দিতে হচ্ছে৷ শহর থেকে উপকূলীয় মানুষের।
বিগত সরকারের সময় একবার এই সড়কটি একনেকে পাস হয়েছিল, তবে এরপর আর কোনো উন্নয়ন হয়নি। কাজে অনিয়ম ও নিম্ন মানের ইট খোয়া বিটুমিন ব্যবহারের ফলে সড়ক নষ্ট হয়ে বড় বড় গর্ত সৃষ্টি হয়েছে। বিশেষ করে বৃষ্টির কারণে খানাখন্দ এত বড় হয়েছে যে, সড়কটি চলাচলের জন্য একেবারেই অনুপযোগী হয়ে পড়েছে।

দেশের সবচেয়ে বড় উপজেলা শ্যামনগর ও সুন্দরবনের সঙ্গে সড়ক যোগাযোগ ঠিক রাখতে সড়ক ও জনপথ বিভাগ সাতক্ষীরা মেডিকেল কলেজ, আলিপুর বাজার, আলিপুর শ্মশান, কুলিয়া সহ আঞ্চলিক মহাসড়কের ২০ টি স্থানে ইটের সোলিং করে চলাচলের ব্যবস্থা নিয়েছে। পিচ ঢালা রাস্তার ওপর ইটের সোলিং করা হচ্ছে, যা অত্যন্ত লজ্জাজনক বলছেন অনেকেই। এমন পদক্ষেপ কাজের অনিয়ম স্বেচ্ছাচারিতায় বহিংপ্রকাশ ঘটেছে। সড়ক ও জনপদের এমন কর্মকান্ড সমালোচিত সর্ব মহলে।

স্থানীয়রা বাসিন্দা আব্দুর রহমান জানান, সড়কের অধিকাংশ স্থানে পিচ উঠে গিয়ে খানাখন্দে পরিণত হওয়ায় গাড়ির যন্ত্রাংশ নষ্ট হচ্ছে প্রতিদিনই। শুধু ইজিবাইক নয়, বাস ও ট্রাকসহ অন্যান্য যানবাহনও ক্ষতির সম্মুখীন।

বাস চালক আজিজুল জানান, ভাঙ্গা খানা খন্দ সড়কে যাত্রীসংখ্যা কম থাকায় তারা ক্ষতিপূরণের জন্য মালিকের কাছে দায়ভার নিতে পারছেন না। এছাড়া যাতায়াত কম হওয়ায় পরিবহনের আয়ও কমেছে, যা চালক ও পথচারীদের মধ্যে ক্ষোভ সৃষ্টি করেছে।

সাতক্ষীরা জেলা নাগরিক কমিটির নেতা অধ্যাপক ইদ্রিস আলী বলেন, ‘সাতক্ষীরার আকর্ষণ ‘সড়ক পথে সুন্দরবন’ হলেও চলাচলে সীমাহীন দুর্ভোগের শিকার হচ্ছেন জেলার তিনটি উপজেলার মানুষ। এর ফলে সরকার পর্যটক থেকে রাজস্ব হারাচ্ছে এবং ব্যবসা-বাণিজ্যও ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে।’সড়ক ও জনপদের স্বেচ্ছাচারিতার জবাব কেউ নিতে পারে না তারা ইচ্ছে মত কাজ করে। ছাত্র জনতার বিপ্লবের পর যদি এমন দুর্নীতিবাজরা ছড়ি ঘোরায় তা খুবই লজ্জাজনক। নামে বৈষম্য বিরোধী আন্দোলন হলেও এখন চরম বৈষম্য ও অনিয়ম হচ্ছে দেখার কেউ নেই।

সাতক্ষীরা সড়ক ও জনপদের নির্বাহী প্রকৌশলী জানান, সাতক্ষীরা-শ্যামনগর আঞ্চলিক মহাসড়কের ৬২ কিলোমিটার রাস্তা ৫টি প্যাকেজে ৫৬৫ কোটি টাকার টেন্ডার পাস হয়েছে। একটি প্রক্রিয়াধীন সহ চারটি টেন্ডার হয়ে গেছে। বর্ষার পর কাজ শুরু হবে।

সাতক্ষীরা জেলা প্রশাসক মোস্তাক আহমেদ বলেন, সাতক্ষীরা টু শ্যামনগর সড়কের বেহাল দশা আমি জানি। বিষয়টা আমরা আমলে নিয়ে কাজ করছি। ইতিমধ্যে বর্তমান সরকার পাঁচটি প্যাকেজে ভাগ করে এই সড়কের সংস্কার কাজ আগামী অক্টোবরে শুরু করবে। সড়ক সংস্কার হলে মানুষ ভোগান্তি থেকে মুক্তি পাবে।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Satkhira observer

মুক্তির পথ স্বেচ্ছাসেবী ফাউন্ডেশন এর উদ্যোগে বৈদিক স্কুল প্রতিষ্ঠা ও গীতা বিতরণ কর্মসূচি

সড়ক পথে সুন্দরবনের ৬২ কি.মি সড়ক খানা খন্দ : ভোগান্তিতে ১৫ লাখ মানুষ

Update Time : 7 Hours Ago

নিজস্ব প্রতিবেদক:
সাতক্ষীরার অন্যতম আকর্ষণ সড়ক পথে সুন্দরবন।
বিশ্ব ঐতিহ্যর সুন্দরবন একমাত্র সড়ক পথে যাওয়া যায় সাতক্ষীরা হয়ে। সাতক্ষীরা শহর থেকে ৬২ কিলোমিটার পাড়ি দিয়ে সদর, দেবহাটা, কালিগঞ্জ,শ্যামনগর, মুন্সিগঞ্জ হয়ে বুড়িগোয়ালিনী শেষ সড়ক। সেখান থেকে খোলপেটুয়া নদী হয়ে সুন্দরবন। ট্রলার, স্পীড বোট করে গহীন অরণ্য সুন্দরবনে নৈগাশিক সৌন্দর্য আপনি উপভোগ করতে পারবেন।

সুন্দরবনের এই দীর্ঘ ৬২ কিলোমিটার সড়কটি জরাজীর্ণ, খানাখন্দ,ছোট বড় গর্ত মিলে চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। সড়কের বেহাল দশার কারণে প্রতিনয়ত ছোট খাটো দুর্ঘটনা ঘটছে। সুন্দরবনগামী দেশি বিদেশী পর্যটকরা সড়কের বেহাল দশার কারণে সড়ক পথে পরিহার করে মংলা হয়ে সুন্দরবনে ঝুঁকছে। মংলা হয়ে নদী পথের দীর্ঘ সময় লাগার কারণে সুন্দরবন পরিহার করছে পর্যটকরা এতে পর্যটন শিল্পে ধস নামছে।

সাতক্ষীরার আঞ্চলিক মহাসড়ক সাতক্ষীরা থেকে শ্যামনগরের মুন্সিগঞ্জ পর্যন্ত দীর্ঘ ৬২ কিলোমিটার সড়কটি দীর্ঘ এক যুগেও সংস্কার হয়নি। ফলে তিনটি উপজেলা কালিগঞ্জ,শ্যামনগর, দেবহাটা ও সদরের একাংশের প্রায় ১৫ লাখ মানুষ ভোগান্তিতে পড়ছেন। সড়কে বড় বড় গর্ত ও খানাখন্দে ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে ছোট যানবাহন গুলো । এর ফলে সুন্দরবনে পর্যটক আগমন কমছে, যা রাজস্ব আয়েও নেতিবাচক প্রভাব ফেলছে। ব্যবসা-বাণিজ্যও ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে।

‘সাতক্ষীরার প্রধান আকর্ষণ, সড়ক পথে সুন্দরবন’ স্লোগান থাকা সত্ত্বেও সাতক্ষীরা-শ্যামনগর সড়কের বেহাল দশা লেগে আছে। এই সড়কটি সংস্কারের সড়ক ও জনপদের গাফিলতি রয়েছে। যার ফলে দীর্ঘ এক যুগ ভোগান্তি পাড়ি দিতে হচ্ছে৷ শহর থেকে উপকূলীয় মানুষের।
বিগত সরকারের সময় একবার এই সড়কটি একনেকে পাস হয়েছিল, তবে এরপর আর কোনো উন্নয়ন হয়নি। কাজে অনিয়ম ও নিম্ন মানের ইট খোয়া বিটুমিন ব্যবহারের ফলে সড়ক নষ্ট হয়ে বড় বড় গর্ত সৃষ্টি হয়েছে। বিশেষ করে বৃষ্টির কারণে খানাখন্দ এত বড় হয়েছে যে, সড়কটি চলাচলের জন্য একেবারেই অনুপযোগী হয়ে পড়েছে।

দেশের সবচেয়ে বড় উপজেলা শ্যামনগর ও সুন্দরবনের সঙ্গে সড়ক যোগাযোগ ঠিক রাখতে সড়ক ও জনপথ বিভাগ সাতক্ষীরা মেডিকেল কলেজ, আলিপুর বাজার, আলিপুর শ্মশান, কুলিয়া সহ আঞ্চলিক মহাসড়কের ২০ টি স্থানে ইটের সোলিং করে চলাচলের ব্যবস্থা নিয়েছে। পিচ ঢালা রাস্তার ওপর ইটের সোলিং করা হচ্ছে, যা অত্যন্ত লজ্জাজনক বলছেন অনেকেই। এমন পদক্ষেপ কাজের অনিয়ম স্বেচ্ছাচারিতায় বহিংপ্রকাশ ঘটেছে। সড়ক ও জনপদের এমন কর্মকান্ড সমালোচিত সর্ব মহলে।

স্থানীয়রা বাসিন্দা আব্দুর রহমান জানান, সড়কের অধিকাংশ স্থানে পিচ উঠে গিয়ে খানাখন্দে পরিণত হওয়ায় গাড়ির যন্ত্রাংশ নষ্ট হচ্ছে প্রতিদিনই। শুধু ইজিবাইক নয়, বাস ও ট্রাকসহ অন্যান্য যানবাহনও ক্ষতির সম্মুখীন।

বাস চালক আজিজুল জানান, ভাঙ্গা খানা খন্দ সড়কে যাত্রীসংখ্যা কম থাকায় তারা ক্ষতিপূরণের জন্য মালিকের কাছে দায়ভার নিতে পারছেন না। এছাড়া যাতায়াত কম হওয়ায় পরিবহনের আয়ও কমেছে, যা চালক ও পথচারীদের মধ্যে ক্ষোভ সৃষ্টি করেছে।

সাতক্ষীরা জেলা নাগরিক কমিটির নেতা অধ্যাপক ইদ্রিস আলী বলেন, ‘সাতক্ষীরার আকর্ষণ ‘সড়ক পথে সুন্দরবন’ হলেও চলাচলে সীমাহীন দুর্ভোগের শিকার হচ্ছেন জেলার তিনটি উপজেলার মানুষ। এর ফলে সরকার পর্যটক থেকে রাজস্ব হারাচ্ছে এবং ব্যবসা-বাণিজ্যও ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে।’সড়ক ও জনপদের স্বেচ্ছাচারিতার জবাব কেউ নিতে পারে না তারা ইচ্ছে মত কাজ করে। ছাত্র জনতার বিপ্লবের পর যদি এমন দুর্নীতিবাজরা ছড়ি ঘোরায় তা খুবই লজ্জাজনক। নামে বৈষম্য বিরোধী আন্দোলন হলেও এখন চরম বৈষম্য ও অনিয়ম হচ্ছে দেখার কেউ নেই।

সাতক্ষীরা সড়ক ও জনপদের নির্বাহী প্রকৌশলী জানান, সাতক্ষীরা-শ্যামনগর আঞ্চলিক মহাসড়কের ৬২ কিলোমিটার রাস্তা ৫টি প্যাকেজে ৫৬৫ কোটি টাকার টেন্ডার পাস হয়েছে। একটি প্রক্রিয়াধীন সহ চারটি টেন্ডার হয়ে গেছে। বর্ষার পর কাজ শুরু হবে।

সাতক্ষীরা জেলা প্রশাসক মোস্তাক আহমেদ বলেন, সাতক্ষীরা টু শ্যামনগর সড়কের বেহাল দশা আমি জানি। বিষয়টা আমরা আমলে নিয়ে কাজ করছি। ইতিমধ্যে বর্তমান সরকার পাঁচটি প্যাকেজে ভাগ করে এই সড়কের সংস্কার কাজ আগামী অক্টোবরে শুরু করবে। সড়ক সংস্কার হলে মানুষ ভোগান্তি থেকে মুক্তি পাবে।