Dhaka , Tuesday, 2 September 2025
News Title :
মুক্তির পথ স্বেচ্ছাসেবী ফাউন্ডেশন এর উদ্যোগে বৈদিক স্কুল প্রতিষ্ঠা ও গীতা বিতরণ কর্মসূচি দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গে তালা সেচ্ছাসেবক দলের নেতা রফিকুল ইসলামের পদ স্থগিত তালায় বন প্রহরির  ইউনুস আলীর বিরুদ্ধে বন্যা নিয়ন্ত্রন বাঁধের গাছ বিক্রির অভিযোগ সড়ক পথে সুন্দরবনের ৬২ কি.মি সড়ক খানা খন্দ : ভোগান্তিতে ১৫ লাখ মানুষ মুক্তিযুদ্ধের সর্বাধিনায়ক জেনারেল ওসমানীর ১০৭ তম জন্মবার্ষিকী আজ তালায় স্বেচ্ছাসেবক দলের আহবায়কের বিরুদ্ধে সংখ্যালঘুদের জমি দখলের অভিযোগ নিহত বিএনপি নেতার মেয়ের বিয়ে আনুষ্ঠানিকতা সম্পন্ন করলেন তারেক রহমান ডুমুরিয়া অনলাইন জুয়ার ফাঁদে দেনার-দায়ে আত্মহত্যা স্কুল শিক্ষকের টানা তিন মাস পর উন্মুক্ত হচ্ছে সুন্দরবন :উপকূলে আনন্দের জোয়ার বিষ্ণুপুর ইউনিয়ন বিএনপির কাউন্সিলে দুয়ারে দুয়ারে প্রার্থীরা: লড়াই হবে হাড্ডাহাড্ডি

মুক্তিযুদ্ধের সর্বাধিনায়ক জেনারেল ওসমানীর ১০৭ তম জন্মবার্ষিকী আজ

বিশেষ প্রতিবেদন:
জেলারেল আতাউল গণী ওসমানীর জন্ম ১৯১৮ সালের ১লা সেপ্টেম্বর সুনামগঞ্জে। তার পৈত্রিক বাড়ি সিলেট জেলার বালাগঞ্জ থানার (বর্তমান ওসমানী নগর উপজেলা) দয়ামীরে। তার পিতা খান বাহাদুর মফিজুর রহমান এবং মাতা জোবেদা খাতুন।

পিতার চাকরির সূত্রে তার শৈশব-কৈশোর কেটেছে বিভিন্ন জায়গায়। তাই কিছুদিন পর বদলির আদেশ নিয়ে সুনামগঞ্জ থেকে চলে যেতে হয় গোহাটিতে৷ আর সেখানেই ওসমানীর প্রাথমিক শিক্ষার শুরু হয়৷ ১৯২৩ সালে ‘কটনস্ স্কুল অব আসাম’-এ ভর্তি হন তিনি ৷ লেখাপড়ায় যে তিনি খুবই মনোযোগী ছিলেন, তার প্রমাণ হলো স্কুলের প্রত্যেক পরীক্ষায় তিনি প্রথম হতেন৷ ১৯৩২ সালে ওসমানী সিলেট গভর্নমেন্ট পাইলট হাই স্কুল এ ভর্তি হন ৷ তৎকালীন সময়ে সিলেটের এই স্কুলটি কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে ছিল৷ ১৯৩৪ সালে সিলেট সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় থেকে ম্যাট্রিক পাস করেন অসাধারণ কৃতিত্বের সাথে৷ সমগ্র ব্রিটিশ ভারতে তিনি প্রথম স্থান লাভ করেন৷ এই অসাধারণ কৃতিত্বের জন্য ব্রিটিশ সরকার এম. এ. জি. ওসমানীকে প্রাইওটোরিয়া পুরস্কার প্রদানের মাধ্যমে সম্মানিত করে। আলীগড় মুসলিম বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতক ডিগ্রি লাভ করেন ১৯৩৮ সালে।

মুক্তিযুদ্ধ শুরু হলে ওসমানী সীমান্ত পার হয়ে ভারতে প্রবেশ করেন। ১১ এপ্রিল, ১৯৭১ প্রধানমন্ত্রী তাজউদ্দিন আহমদ স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রে ভাষণ দেন৷ ঐ ভাষণে তিনি বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর অবকাঠামো গঠনের কথা উল্লেখ করে এমএজি ওসমানীকে মুক্তিবাহিনীর প্রধান সেনাপতি হিসেবে ঘোষণা দেন৷ উল্লেখ্য যে ১০ এপ্রিল স্বাধীনতার ঘোষণাপত্র জারি ও সরকার গঠন করা হয় এবং পরবর্তীকালে ১৭ এপ্রিল মুজিবনগরে গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার শপথ গ্রহণ করে।১৯৭১ সালের ১৭ এপ্রিল গঠিত হয় মুজিবনগর সরকার, ওসমানীকে করা হয় মুক্তিবাহিনীর প্রধান সেনাপতি।

ওসমানীর নির্দেশনা অনুযায়ী সমগ্র বাংলাদেশকে ১১টি সেক্টরে ভাগ করা হয়। প্রতিটি সেক্টরের সেক্টর কমান্ডার হিসেবে এক একজন সেনাবাহিনীর অফিসারকে নিয়োগ দেয়া হয়। বিভিন্ন সেক্টর ও বাহিনীর মাঝে সমন্বয়সাধন করা, রাজনৈতিক নেতৃত্বের সাথে যোগাযোগ রাখা, অস্ত্রের যোগান নিশ্চিত করা, গেরিলা বাহিনীর প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা-প্রভৃতি কাজ সাফল্যের সাথে পালন করেন ওসমানী। ১২ এপ্রিল থেকে এমএজি ওসমানী মন্ত্রীর সমমর্যাদায় বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর প্রধান সেনাপতি হিসেবে যুদ্ধ পরিচালনার দায়িত্বভার গ্রহণ করেন৷ রণনীতির বিশেষ কৌশল হিসেবে সমগ্র বাংলাদেশকে তিনি ১১ টি সেক্টরে ভাগ করে যুদ্ধ পরিচালনা করেন।

ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়ে চিকিৎসার্থে লন্ডন থাকাকালীন ১৯৮৪ সালের ১৬ই ফেব্রুয়ারি এমএজি ওসমানী মৃত্যুবরণ করেন। তাকে পূর্ণ সামরিক মর্যাদায় সিলেটের হযরত শাহজালাল মাজারে সমাহিত করা হয়।

তার স্মরণে ঢাকায় ‘ওসমানী উদ্যান’ গড়ে উঠেছে ও বাংলাদেশ সচিবালয়ের বিপরীতে ‘ওসমানী মেমোরিয়াল হল’ স্থাপিত হয়েছে৷ এছাড়া তার সিলেটস্থ বাসভবনকে জাদুঘরে পরিণত করা হয়েছে। সরকারি উদ্যোগে সিলেট শহরে তার নামে একটি মেডিকেল কলেজ, হাসপাতাল ও আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে৷ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় এমআইএসটি এবং বুটেক্স এর আবাসিক হল “ওসমানী হল” কে তার নামে নামকরণ করা হয়েছে এবং ১৯৮৫ সালে বাংলাদেশ সরকার মরণোত্তর স্বাধীনতা পুরস্কারে ভূষিত করে

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Satkhira observer

মুক্তির পথ স্বেচ্ছাসেবী ফাউন্ডেশন এর উদ্যোগে বৈদিক স্কুল প্রতিষ্ঠা ও গীতা বিতরণ কর্মসূচি

মুক্তিযুদ্ধের সর্বাধিনায়ক জেনারেল ওসমানীর ১০৭ তম জন্মবার্ষিকী আজ

Update Time : 07:45 am, Monday, 1 September 2025

বিশেষ প্রতিবেদন:
জেলারেল আতাউল গণী ওসমানীর জন্ম ১৯১৮ সালের ১লা সেপ্টেম্বর সুনামগঞ্জে। তার পৈত্রিক বাড়ি সিলেট জেলার বালাগঞ্জ থানার (বর্তমান ওসমানী নগর উপজেলা) দয়ামীরে। তার পিতা খান বাহাদুর মফিজুর রহমান এবং মাতা জোবেদা খাতুন।

পিতার চাকরির সূত্রে তার শৈশব-কৈশোর কেটেছে বিভিন্ন জায়গায়। তাই কিছুদিন পর বদলির আদেশ নিয়ে সুনামগঞ্জ থেকে চলে যেতে হয় গোহাটিতে৷ আর সেখানেই ওসমানীর প্রাথমিক শিক্ষার শুরু হয়৷ ১৯২৩ সালে ‘কটনস্ স্কুল অব আসাম’-এ ভর্তি হন তিনি ৷ লেখাপড়ায় যে তিনি খুবই মনোযোগী ছিলেন, তার প্রমাণ হলো স্কুলের প্রত্যেক পরীক্ষায় তিনি প্রথম হতেন৷ ১৯৩২ সালে ওসমানী সিলেট গভর্নমেন্ট পাইলট হাই স্কুল এ ভর্তি হন ৷ তৎকালীন সময়ে সিলেটের এই স্কুলটি কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে ছিল৷ ১৯৩৪ সালে সিলেট সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় থেকে ম্যাট্রিক পাস করেন অসাধারণ কৃতিত্বের সাথে৷ সমগ্র ব্রিটিশ ভারতে তিনি প্রথম স্থান লাভ করেন৷ এই অসাধারণ কৃতিত্বের জন্য ব্রিটিশ সরকার এম. এ. জি. ওসমানীকে প্রাইওটোরিয়া পুরস্কার প্রদানের মাধ্যমে সম্মানিত করে। আলীগড় মুসলিম বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতক ডিগ্রি লাভ করেন ১৯৩৮ সালে।

মুক্তিযুদ্ধ শুরু হলে ওসমানী সীমান্ত পার হয়ে ভারতে প্রবেশ করেন। ১১ এপ্রিল, ১৯৭১ প্রধানমন্ত্রী তাজউদ্দিন আহমদ স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রে ভাষণ দেন৷ ঐ ভাষণে তিনি বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর অবকাঠামো গঠনের কথা উল্লেখ করে এমএজি ওসমানীকে মুক্তিবাহিনীর প্রধান সেনাপতি হিসেবে ঘোষণা দেন৷ উল্লেখ্য যে ১০ এপ্রিল স্বাধীনতার ঘোষণাপত্র জারি ও সরকার গঠন করা হয় এবং পরবর্তীকালে ১৭ এপ্রিল মুজিবনগরে গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার শপথ গ্রহণ করে।১৯৭১ সালের ১৭ এপ্রিল গঠিত হয় মুজিবনগর সরকার, ওসমানীকে করা হয় মুক্তিবাহিনীর প্রধান সেনাপতি।

ওসমানীর নির্দেশনা অনুযায়ী সমগ্র বাংলাদেশকে ১১টি সেক্টরে ভাগ করা হয়। প্রতিটি সেক্টরের সেক্টর কমান্ডার হিসেবে এক একজন সেনাবাহিনীর অফিসারকে নিয়োগ দেয়া হয়। বিভিন্ন সেক্টর ও বাহিনীর মাঝে সমন্বয়সাধন করা, রাজনৈতিক নেতৃত্বের সাথে যোগাযোগ রাখা, অস্ত্রের যোগান নিশ্চিত করা, গেরিলা বাহিনীর প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা-প্রভৃতি কাজ সাফল্যের সাথে পালন করেন ওসমানী। ১২ এপ্রিল থেকে এমএজি ওসমানী মন্ত্রীর সমমর্যাদায় বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর প্রধান সেনাপতি হিসেবে যুদ্ধ পরিচালনার দায়িত্বভার গ্রহণ করেন৷ রণনীতির বিশেষ কৌশল হিসেবে সমগ্র বাংলাদেশকে তিনি ১১ টি সেক্টরে ভাগ করে যুদ্ধ পরিচালনা করেন।

ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়ে চিকিৎসার্থে লন্ডন থাকাকালীন ১৯৮৪ সালের ১৬ই ফেব্রুয়ারি এমএজি ওসমানী মৃত্যুবরণ করেন। তাকে পূর্ণ সামরিক মর্যাদায় সিলেটের হযরত শাহজালাল মাজারে সমাহিত করা হয়।

তার স্মরণে ঢাকায় ‘ওসমানী উদ্যান’ গড়ে উঠেছে ও বাংলাদেশ সচিবালয়ের বিপরীতে ‘ওসমানী মেমোরিয়াল হল’ স্থাপিত হয়েছে৷ এছাড়া তার সিলেটস্থ বাসভবনকে জাদুঘরে পরিণত করা হয়েছে। সরকারি উদ্যোগে সিলেট শহরে তার নামে একটি মেডিকেল কলেজ, হাসপাতাল ও আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে৷ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় এমআইএসটি এবং বুটেক্স এর আবাসিক হল “ওসমানী হল” কে তার নামে নামকরণ করা হয়েছে এবং ১৯৮৫ সালে বাংলাদেশ সরকার মরণোত্তর স্বাধীনতা পুরস্কারে ভূষিত করে