Dhaka , Tuesday, 2 September 2025
News Title :
মুক্তির পথ স্বেচ্ছাসেবী ফাউন্ডেশন এর উদ্যোগে বৈদিক স্কুল প্রতিষ্ঠা ও গীতা বিতরণ কর্মসূচি দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গে তালা সেচ্ছাসেবক দলের নেতা রফিকুল ইসলামের পদ স্থগিত তালায় বন প্রহরির  ইউনুস আলীর বিরুদ্ধে বন্যা নিয়ন্ত্রন বাঁধের গাছ বিক্রির অভিযোগ সড়ক পথে সুন্দরবনের ৬২ কি.মি সড়ক খানা খন্দ : ভোগান্তিতে ১৫ লাখ মানুষ মুক্তিযুদ্ধের সর্বাধিনায়ক জেনারেল ওসমানীর ১০৭ তম জন্মবার্ষিকী আজ তালায় স্বেচ্ছাসেবক দলের আহবায়কের বিরুদ্ধে সংখ্যালঘুদের জমি দখলের অভিযোগ নিহত বিএনপি নেতার মেয়ের বিয়ে আনুষ্ঠানিকতা সম্পন্ন করলেন তারেক রহমান ডুমুরিয়া অনলাইন জুয়ার ফাঁদে দেনার-দায়ে আত্মহত্যা স্কুল শিক্ষকের টানা তিন মাস পর উন্মুক্ত হচ্ছে সুন্দরবন :উপকূলে আনন্দের জোয়ার বিষ্ণুপুর ইউনিয়ন বিএনপির কাউন্সিলে দুয়ারে দুয়ারে প্রার্থীরা: লড়াই হবে হাড্ডাহাড্ডি

তালায় স্বেচ্ছাসেবক দলের আহবায়কের বিরুদ্ধে সংখ্যালঘুদের জমি দখলের অভিযোগ

নিজস্ব প্রতিবেদক :
সাতক্ষীরায় এক স্বেচ্ছাসেবক দল নেতার বিরুদ্ধে সংখ্যালঘুদের জমি, সেমাই কারখানা ও বিপুল অঙ্কের চাঁদা দাবির অভিযোগ উঠেছে। এ নিয়ে ভুক্তভোগীরা শনিবার (৩০ আগস্ট) জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের আহ্বায়ক ও সদস্য সচিবের কাছে লিখিত অভিযোগ জমা দিয়েছেন।

এর আগে শুক্রবার (২২ আগস্ট) শপিং ভ্যালি ফুড প্রোডাক্টস কোম্পানির পক্ষ থেকেও লিখিত অভিযোগ দেওয়া হয়। এ ঘটনায় জেলা স্বেচ্ছাসেবক দল চার সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করেছে।

অভিযুক্ত রফিকুল ইসলাম তালা সদরের আটারই গ্রামের মৃত আক্কাজ আলী মোড়লের ছেলে। তিনি উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের আহ্বায়ক হিসেবেও দায়িত্ব পালন করছেন।

হরিশচন্দ্রকাটি গ্রামের তরুণ কান্তি চক্রবর্তী বলেন, ‘বিএনপির সূচনালগ্ন থেকেই আমি দলের সঙ্গে আছি। জিয়াউর রহমানের সঙ্গে কয়েকবার দেখা করার সুযোগও পেয়েছি। অথচ দলেরই একজন নেতা রফিকুল ইসলাম সন্ত্রাসী কায়দায় আমার কয়েকটি জমি দখল করে নিয়েছে। আমি জমিতে গেলে দেশ ছাড়ার হুমকি দেওয়া হয়। থানায় একাধিকবার অভিযোগ করেও প্রতিকার পাইনি। এখন আদালতের শরণাপন্ন হয়েছি।’

অভিযোগে তিনি আরও উল্লেখ করেন, প্রতিপক্ষের সঙ্গে যোগসাজশ করে তার জমিতে থাকা ফসলও নষ্ট করা হয়েছে। সাংগঠনিকভাবেও রফিকুল ইসলামের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি।

শপিং ভ্যালি ফুড প্রোডাক্টস কোম্পানির ব্যবস্থাপনা পরিচালক জহর হাসান জানান, ২০২২ সালে আটারই গ্রামে সেমাই কারখানা স্থাপন করা হয়। সব আইন মেনে ব্যবসা পরিচালিত হলেও সম্প্রতি রফিকুল ইসলাম রাজনৈতিক প্রভাব খাটিয়ে ফ্যাক্টরিটি দখলের চেষ্টা করছেন। তিনি ৪৫ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করেন। টাকা না দিলে ১৩ জুলাই কারখানায় প্রবেশ করে উৎপাদন বন্ধ করে দেন, ভাঙচুর চালান এবং মূল ফটকে তালা ঝুলিয়ে দেন।

তিনি আরও জানান, এ ঘটনার ভিডিও ফুটেজ ও কল রেকর্ড সংরক্ষিত আছে। রফিকুল ইসলাম হুমকি দিয়েছেন চাঁদা না দিলে হত্যাকাণ্ড ঘটানো হবে। এরইমধ্যে প্রায় ৩০ জন শ্রমিক কর্মহীন হয়ে পড়েছেন।

কারখানার নৈশ্যপ্রহরী হজরত আলী বলেন, ‘রফিকুল ইসলাম দাবি করেছেন, এখানে তারও জমি আছে। টাকা না দিলে কোম্পানি চালাতে দেওয়া হবে না। এমনকি তিনি মোবাইলে আমাকে ৫০টি হত্যা করার হুমকি দেন। সেই কল রেকর্ড কোম্পানির কাছে দিয়েছি।’

ভুক্তভোগীরা অভিযোগ করেছেন, দীর্ঘদিন ধরে রাজনৈতিক পরিচয়কে ঢাল বানিয়ে রফিকুল ইসলাম নানা অনিয়ম চালিয়ে যাচ্ছেন। তার বিরুদ্ধে থানায় ও উপজেলা বিএনপির কাছে অভিযোগ দিলেও কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি।

অভিযুক্ত রফিকুল ইসলাম অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, ‘হিন্দু পরিবারের জমি দখলের বিষয়টি সম্পূর্ণ মিথ্যা। তবে শপিং ভ্যালি কারখানার জায়গায় আমারও অংশ রয়েছে। যাই হোক না কেন জমি আমি ছাড়ব না।’

জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের যুগ্ম আহ্বায়ক ও তদন্ত কমিটির সদস্য মহাসীন আলম জানান, অভিযোগগুলো তদন্ত করা হয়েছে। ভুক্তভোগীরা অবশ্যই ন্যায়বিচার পাবেন। অভিযোগ প্রমাণিত হলে সাংগঠনিকভাবে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

এ ঘটনাকে ঘিরে সাতক্ষীরার রাজনৈতিক অঙ্গনে তীব্র আলোড়ন সৃষ্টি হয়েছে। স্থানীয়রা বলছেন, দলে দায়িত্বশীল পদে থাকা একজন নেতার বিরুদ্ধে এমন অভিযোগ গোটা সংগঠনের জন্য গুরুতর ইঙ্গিত বহন করছে।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Satkhira observer

মুক্তির পথ স্বেচ্ছাসেবী ফাউন্ডেশন এর উদ্যোগে বৈদিক স্কুল প্রতিষ্ঠা ও গীতা বিতরণ কর্মসূচি

তালায় স্বেচ্ছাসেবক দলের আহবায়কের বিরুদ্ধে সংখ্যালঘুদের জমি দখলের অভিযোগ

Update Time : 06:36 pm, Sunday, 31 August 2025

নিজস্ব প্রতিবেদক :
সাতক্ষীরায় এক স্বেচ্ছাসেবক দল নেতার বিরুদ্ধে সংখ্যালঘুদের জমি, সেমাই কারখানা ও বিপুল অঙ্কের চাঁদা দাবির অভিযোগ উঠেছে। এ নিয়ে ভুক্তভোগীরা শনিবার (৩০ আগস্ট) জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের আহ্বায়ক ও সদস্য সচিবের কাছে লিখিত অভিযোগ জমা দিয়েছেন।

এর আগে শুক্রবার (২২ আগস্ট) শপিং ভ্যালি ফুড প্রোডাক্টস কোম্পানির পক্ষ থেকেও লিখিত অভিযোগ দেওয়া হয়। এ ঘটনায় জেলা স্বেচ্ছাসেবক দল চার সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করেছে।

অভিযুক্ত রফিকুল ইসলাম তালা সদরের আটারই গ্রামের মৃত আক্কাজ আলী মোড়লের ছেলে। তিনি উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের আহ্বায়ক হিসেবেও দায়িত্ব পালন করছেন।

হরিশচন্দ্রকাটি গ্রামের তরুণ কান্তি চক্রবর্তী বলেন, ‘বিএনপির সূচনালগ্ন থেকেই আমি দলের সঙ্গে আছি। জিয়াউর রহমানের সঙ্গে কয়েকবার দেখা করার সুযোগও পেয়েছি। অথচ দলেরই একজন নেতা রফিকুল ইসলাম সন্ত্রাসী কায়দায় আমার কয়েকটি জমি দখল করে নিয়েছে। আমি জমিতে গেলে দেশ ছাড়ার হুমকি দেওয়া হয়। থানায় একাধিকবার অভিযোগ করেও প্রতিকার পাইনি। এখন আদালতের শরণাপন্ন হয়েছি।’

অভিযোগে তিনি আরও উল্লেখ করেন, প্রতিপক্ষের সঙ্গে যোগসাজশ করে তার জমিতে থাকা ফসলও নষ্ট করা হয়েছে। সাংগঠনিকভাবেও রফিকুল ইসলামের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি।

শপিং ভ্যালি ফুড প্রোডাক্টস কোম্পানির ব্যবস্থাপনা পরিচালক জহর হাসান জানান, ২০২২ সালে আটারই গ্রামে সেমাই কারখানা স্থাপন করা হয়। সব আইন মেনে ব্যবসা পরিচালিত হলেও সম্প্রতি রফিকুল ইসলাম রাজনৈতিক প্রভাব খাটিয়ে ফ্যাক্টরিটি দখলের চেষ্টা করছেন। তিনি ৪৫ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করেন। টাকা না দিলে ১৩ জুলাই কারখানায় প্রবেশ করে উৎপাদন বন্ধ করে দেন, ভাঙচুর চালান এবং মূল ফটকে তালা ঝুলিয়ে দেন।

তিনি আরও জানান, এ ঘটনার ভিডিও ফুটেজ ও কল রেকর্ড সংরক্ষিত আছে। রফিকুল ইসলাম হুমকি দিয়েছেন চাঁদা না দিলে হত্যাকাণ্ড ঘটানো হবে। এরইমধ্যে প্রায় ৩০ জন শ্রমিক কর্মহীন হয়ে পড়েছেন।

কারখানার নৈশ্যপ্রহরী হজরত আলী বলেন, ‘রফিকুল ইসলাম দাবি করেছেন, এখানে তারও জমি আছে। টাকা না দিলে কোম্পানি চালাতে দেওয়া হবে না। এমনকি তিনি মোবাইলে আমাকে ৫০টি হত্যা করার হুমকি দেন। সেই কল রেকর্ড কোম্পানির কাছে দিয়েছি।’

ভুক্তভোগীরা অভিযোগ করেছেন, দীর্ঘদিন ধরে রাজনৈতিক পরিচয়কে ঢাল বানিয়ে রফিকুল ইসলাম নানা অনিয়ম চালিয়ে যাচ্ছেন। তার বিরুদ্ধে থানায় ও উপজেলা বিএনপির কাছে অভিযোগ দিলেও কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি।

অভিযুক্ত রফিকুল ইসলাম অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, ‘হিন্দু পরিবারের জমি দখলের বিষয়টি সম্পূর্ণ মিথ্যা। তবে শপিং ভ্যালি কারখানার জায়গায় আমারও অংশ রয়েছে। যাই হোক না কেন জমি আমি ছাড়ব না।’

জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের যুগ্ম আহ্বায়ক ও তদন্ত কমিটির সদস্য মহাসীন আলম জানান, অভিযোগগুলো তদন্ত করা হয়েছে। ভুক্তভোগীরা অবশ্যই ন্যায়বিচার পাবেন। অভিযোগ প্রমাণিত হলে সাংগঠনিকভাবে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

এ ঘটনাকে ঘিরে সাতক্ষীরার রাজনৈতিক অঙ্গনে তীব্র আলোড়ন সৃষ্টি হয়েছে। স্থানীয়রা বলছেন, দলে দায়িত্বশীল পদে থাকা একজন নেতার বিরুদ্ধে এমন অভিযোগ গোটা সংগঠনের জন্য গুরুতর ইঙ্গিত বহন করছে।