Dhaka , Friday, 29 August 2025
News Title :
সীমান্তে অভিযানে ৩৫ বোতল মদসহ ভারতীয় মালামাল আটক সুন্দরবনে দস্যু আলম ও দুলাভাই বাহিনীর আতঙ্কে জেলেরা : জিম্মি করে মুক্তিপণ দাবি শ্যামনগর জনবান্ধব কর্মকাণ্ডে জনপ্রিয় হয়ে উঠেছেন, ইউএনও মোছাঃ রনী খাতুন কালিগঞ্জ থানার ওসিকে বদলি নতুন ওসি মিজান অনলাইন জুয়ায় নিঃস্ব হাজার হাজার যুবক : ঝুঁকছে ভয়ংকর অপরাধে বনবিভাগের সামনেই পাচার হচ্ছে সুন্দরবনের মূল্যবান কাঠ সাতক্ষীরায় চিংড়ীতে জেলী পুশ : ব্যবসায়ীকে লক্ষাধিক টাকা জরিমানা যুবদল নেতা শামীম হত্যার দায়স্বীকার করল স্ত্রী ও শ্যালক সাতক্ষীরায় ব্র্যাকের জলবায়ু পরিবর্তন ও স্বাস্থ্য কর্মশালা অনুষ্ঠিত সাতক্ষীরা অবজার্ভারে সংবাদ প্রকাশে কালিগঞ্জে অভিযানে ১৬ কেজি পুশকৃত বাগদা চিংড়ি জব্দ

সুন্দরবনে দস্যু আলম ও দুলাভাই বাহিনীর আতঙ্কে জেলেরা : জিম্মি করে মুক্তিপণ দাবি

সুন্দরবন থেকে ফিরে:

সুন্দরবনে নতুনকরে ভয়ানক রূপে আর্বিভূত হয়েছে বনদ্যসুরা। নৌকা প্রতি মাসিক টাকা দিয়েও আতঙ্কে দিন কাটছে জেলেদের। জেলেরা বলছে নৌকাপ্রতি মাসিক ২০ হাজার টাকা দিয়ে কার্ড করে বনে ডুকে মৎস্য শিকার করতে হয়। কিন্তু বনদ্যসুদের মাসিক টাকা দিয়েও রক্ষা হচ্ছে না যেকোন মুহুর্তে জেলেদের উঠিয়ে নিয়ে পরিবারের কাছে দাবি করছে মোটা অংকের টাকা।
মুক্তিপণ না মিললে নির্যাতন করে মেরে ফেলার হুমকিও দিচ্ছে। সম্প্রতি এমন একটি ঘটনা ঘটেছে দ্বীপ ইউনিয়ন গাবুরার বাসিন্দা আরিফুলের সাথে।
৪ ভাই নৌকা নিয়ে সুন্দরবনে যাওয়ার আগে বনদ্যসুদের নির্ধারিত টাকা দিয়ে কার্ড করে যায়। সুন্দরবনে ঢোকার ৩/৪ দিন পর একভাইকে তুলে নিয়ে পরিবারের কাছে ৪ লক্ষ টাকা মুক্তিপণ দাবি করে।
অহসায় আরিফুলের পরিবার নৌকা বিক্রি করে ২ লাখ টাকা দিলেও বাকি ২ লাখ টাকর জন্য প্রতিনিয়ত চাপ দিচ্ছে বনদস্যুরা। আরিফুলের পরিবার এখন আতঙ্কে দিন কাটছে। বনদ্যসুরা বলছে বাকি টাকা না পেলে লোকালয়ে ডুকে বাড়ি থেকে স্ত্রী সন্তানদের উঠিয়ে নিয়ে যাবে।
এ বিষয়ে আরিফুলের পরিবার শ্যামনগর থানায় অভিযোগ দাখিল করলেও কোন সুরহা পায়নি প্রশাসনের কোনও পদক্ষেপ নিতে দেখা যায়নি। আরিফুলের বাবা নিরুপায় হয়ে র ্যাব ৬ খুলনা কোম্পানিতে অভিযোগ দাখিল করে।

সুন্দরবনের মাছ ধরে ফিরে আসা আরেক জেলে আবু মুছা বলেন, সুন্দরবনে এখন আতঙ্ক ছড়াচ্ছে আলম ও দুলাভাই বাহিনী। তাদের মাসিক নৌকা প্রতি টাকা না দিলে বনে মাছ ধরতে যাওয়া যায় না। মাসে ২০ হাজার টাকা তাদের দিলে ১৫ দিনের গণমুখে কত টাকা মাছ ধরা যায়। তার ইচ্ছে মত জেলেদের উঠিয়ে নিয়ে যাচ্ছে। বড় অংঙ্কের টাকা দাবি করছে।

সুন্দরবনের আরেক জেলে রাঙ্গা জানান, আমিও একসময় বনদ্যসু ছিলাম। ১০ বছর জেল খেটে এখন সুন্দরবনে মাছ ধরে জীবিকা নির্বাহ করি। আমাদের প্রতি মাসে নৌকা প্রতি টাকা দিতে হয়। টাকা না দিলে মাছ ধরতে দেয় না নির্যাতন করে উঠিয়ে নিয়ে। আমরা উপকূলের বাসিন্দা সুন্দরবন আমাদের আয়ের উৎস্য। আমরা এই বনদ্যসুদের হাত থেকে বাঁচতে চায়।

ভুক্তভোগী আরিফুলের মা প্রথমে গণমাধ্যমের কাছে মুখ খুলতে চায়নি পরে কান্না করে বলেন, আমরা এখন রাতে ঘুমাতে পারি না। আমদের উঠিয়ে নিয়ে যাওয়ার হুমকি দিচ্ছে। ২ লাখ টাকা নৌকা বেঁচে বনদ্যসুদের দিয়েছি কিন্তু রেহাই পাচ্ছি না ৪ লাখ টাকা দাবি করছে। আমরা এখন নিরাপত্তা চায়।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ওই অঞ্জলের এক বাসিন্দা বলেন, সুন্দরবনে দ্যসুদের আতঙ্কে জেলেরা সাহস পায় না মাছ ধরতে। তারা বিভিন্ন ধাপে ধাপে নৌকা প্রতি মাসুিক টাকা নেয়। সুন্দরবনের বাইরে লোকালয়ে তাদের মনোনীত লোকসেট করা আছে। দস্যু বাহিনীর মনোনীত ব্যক্তি মাসিক টাকা নিয়ে নৌকা প্রতি একটি স্লিপ দেয়। নির্দিষ্ট একটি বিকাশের দোকানে থেকে দ্যসুদের পরিবারের কাছে সেই টাকা পাঠানো হয়।

এমন তথ্যর ভিত্তিতে আমরা অনুসন্ধান চালিয়ে গাবুরার ভুক্তভোগী আরিফুলের পাঠানো ২ লাখ টাকার ভিতরে ১ লাখ টাকা যে বিকাশ দোকান থেকে লেনদেন করা হয় সেখানে পৌঁছায় । বিকাশ দোকানের মালিক মহিলা প্রথমে কথা বলতে রাজি না হলেও পরবর্তীতে গণমাধ্যমে কথা বলতে স্বীকার হয়। তার দোকান থেকে লেনদেন কৃত বইয়ে দেখতে পায় অস্বাভাবিক লেনদেন।
আরিফুলের পাঠানো ১ লাখ টাকা বিকাশ এজেন্ট নাম্বারে ফোন দিলে তিনি কথা না বলে কেটে দেয়।

জেলেদের অভিযোগ রয়েছে বনবিভাগের কিছু কর্মকর্তাদের সাথে বনদ্যসুদের যোগসাজশ রয়েছে। তাদের যোগাসাজশের কারণে দ্যসুরা আরও বেপরোয়া হয়ে উঠেছে।

আমরা কথা বলি, কাটেশ্বরী ফরেস্ট গার্ড মোস্তাফিজুর সাথে তিনি গণমাধ্যম দেখে ইতস্তত বোধ করে কথা বলতে চায়নি। তিনি মুন্সিগঞ্জ পশ্চিম জোন ফরেষ্ট কর্মকর্তা জিয়াউরকে ফোন দেন। জিয়াউর সাংবাদিকদের ম্যানেজ করার নির্দেশনা দেন।

মুন্সিগঞ্জ পশ্চিম বিভাগের ফরেষ্ট কর্মকর্তা জিয়াউর রহমান গণমাধ্যমেকে বলেন, আমাদের বন বিভাগের টহল টিম সবসময় নজরদারি করছে। বনে প্রবেশ নিষেধাজ্ঞার সময় বন বিভাগের সামনে কাঠ পাচার করছে এমন বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন আমরা বিষয় টি দেখব কোন কর্মকর্তা,ফরেষ্ট গার্ড জড়িত থাকলে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিব। বনদ্যসু নির্মূলে সকল বাহিনী ও প্রশাসন সহযোগিতা করলে আমরা এদের অভিযান করে ধরতে পারব। বনদ্যসু দমন করতে পারবো।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Satkhira observer

Popular Post

সীমান্তে অভিযানে ৩৫ বোতল মদসহ ভারতীয় মালামাল আটক

সুন্দরবনে দস্যু আলম ও দুলাভাই বাহিনীর আতঙ্কে জেলেরা : জিম্মি করে মুক্তিপণ দাবি

Update Time : 4 Hours Ago

সুন্দরবন থেকে ফিরে:

সুন্দরবনে নতুনকরে ভয়ানক রূপে আর্বিভূত হয়েছে বনদ্যসুরা। নৌকা প্রতি মাসিক টাকা দিয়েও আতঙ্কে দিন কাটছে জেলেদের। জেলেরা বলছে নৌকাপ্রতি মাসিক ২০ হাজার টাকা দিয়ে কার্ড করে বনে ডুকে মৎস্য শিকার করতে হয়। কিন্তু বনদ্যসুদের মাসিক টাকা দিয়েও রক্ষা হচ্ছে না যেকোন মুহুর্তে জেলেদের উঠিয়ে নিয়ে পরিবারের কাছে দাবি করছে মোটা অংকের টাকা।
মুক্তিপণ না মিললে নির্যাতন করে মেরে ফেলার হুমকিও দিচ্ছে। সম্প্রতি এমন একটি ঘটনা ঘটেছে দ্বীপ ইউনিয়ন গাবুরার বাসিন্দা আরিফুলের সাথে।
৪ ভাই নৌকা নিয়ে সুন্দরবনে যাওয়ার আগে বনদ্যসুদের নির্ধারিত টাকা দিয়ে কার্ড করে যায়। সুন্দরবনে ঢোকার ৩/৪ দিন পর একভাইকে তুলে নিয়ে পরিবারের কাছে ৪ লক্ষ টাকা মুক্তিপণ দাবি করে।
অহসায় আরিফুলের পরিবার নৌকা বিক্রি করে ২ লাখ টাকা দিলেও বাকি ২ লাখ টাকর জন্য প্রতিনিয়ত চাপ দিচ্ছে বনদস্যুরা। আরিফুলের পরিবার এখন আতঙ্কে দিন কাটছে। বনদ্যসুরা বলছে বাকি টাকা না পেলে লোকালয়ে ডুকে বাড়ি থেকে স্ত্রী সন্তানদের উঠিয়ে নিয়ে যাবে।
এ বিষয়ে আরিফুলের পরিবার শ্যামনগর থানায় অভিযোগ দাখিল করলেও কোন সুরহা পায়নি প্রশাসনের কোনও পদক্ষেপ নিতে দেখা যায়নি। আরিফুলের বাবা নিরুপায় হয়ে র ্যাব ৬ খুলনা কোম্পানিতে অভিযোগ দাখিল করে।

সুন্দরবনের মাছ ধরে ফিরে আসা আরেক জেলে আবু মুছা বলেন, সুন্দরবনে এখন আতঙ্ক ছড়াচ্ছে আলম ও দুলাভাই বাহিনী। তাদের মাসিক নৌকা প্রতি টাকা না দিলে বনে মাছ ধরতে যাওয়া যায় না। মাসে ২০ হাজার টাকা তাদের দিলে ১৫ দিনের গণমুখে কত টাকা মাছ ধরা যায়। তার ইচ্ছে মত জেলেদের উঠিয়ে নিয়ে যাচ্ছে। বড় অংঙ্কের টাকা দাবি করছে।

সুন্দরবনের আরেক জেলে রাঙ্গা জানান, আমিও একসময় বনদ্যসু ছিলাম। ১০ বছর জেল খেটে এখন সুন্দরবনে মাছ ধরে জীবিকা নির্বাহ করি। আমাদের প্রতি মাসে নৌকা প্রতি টাকা দিতে হয়। টাকা না দিলে মাছ ধরতে দেয় না নির্যাতন করে উঠিয়ে নিয়ে। আমরা উপকূলের বাসিন্দা সুন্দরবন আমাদের আয়ের উৎস্য। আমরা এই বনদ্যসুদের হাত থেকে বাঁচতে চায়।

ভুক্তভোগী আরিফুলের মা প্রথমে গণমাধ্যমের কাছে মুখ খুলতে চায়নি পরে কান্না করে বলেন, আমরা এখন রাতে ঘুমাতে পারি না। আমদের উঠিয়ে নিয়ে যাওয়ার হুমকি দিচ্ছে। ২ লাখ টাকা নৌকা বেঁচে বনদ্যসুদের দিয়েছি কিন্তু রেহাই পাচ্ছি না ৪ লাখ টাকা দাবি করছে। আমরা এখন নিরাপত্তা চায়।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ওই অঞ্জলের এক বাসিন্দা বলেন, সুন্দরবনে দ্যসুদের আতঙ্কে জেলেরা সাহস পায় না মাছ ধরতে। তারা বিভিন্ন ধাপে ধাপে নৌকা প্রতি মাসুিক টাকা নেয়। সুন্দরবনের বাইরে লোকালয়ে তাদের মনোনীত লোকসেট করা আছে। দস্যু বাহিনীর মনোনীত ব্যক্তি মাসিক টাকা নিয়ে নৌকা প্রতি একটি স্লিপ দেয়। নির্দিষ্ট একটি বিকাশের দোকানে থেকে দ্যসুদের পরিবারের কাছে সেই টাকা পাঠানো হয়।

এমন তথ্যর ভিত্তিতে আমরা অনুসন্ধান চালিয়ে গাবুরার ভুক্তভোগী আরিফুলের পাঠানো ২ লাখ টাকার ভিতরে ১ লাখ টাকা যে বিকাশ দোকান থেকে লেনদেন করা হয় সেখানে পৌঁছায় । বিকাশ দোকানের মালিক মহিলা প্রথমে কথা বলতে রাজি না হলেও পরবর্তীতে গণমাধ্যমে কথা বলতে স্বীকার হয়। তার দোকান থেকে লেনদেন কৃত বইয়ে দেখতে পায় অস্বাভাবিক লেনদেন।
আরিফুলের পাঠানো ১ লাখ টাকা বিকাশ এজেন্ট নাম্বারে ফোন দিলে তিনি কথা না বলে কেটে দেয়।

জেলেদের অভিযোগ রয়েছে বনবিভাগের কিছু কর্মকর্তাদের সাথে বনদ্যসুদের যোগসাজশ রয়েছে। তাদের যোগাসাজশের কারণে দ্যসুরা আরও বেপরোয়া হয়ে উঠেছে।

আমরা কথা বলি, কাটেশ্বরী ফরেস্ট গার্ড মোস্তাফিজুর সাথে তিনি গণমাধ্যম দেখে ইতস্তত বোধ করে কথা বলতে চায়নি। তিনি মুন্সিগঞ্জ পশ্চিম জোন ফরেষ্ট কর্মকর্তা জিয়াউরকে ফোন দেন। জিয়াউর সাংবাদিকদের ম্যানেজ করার নির্দেশনা দেন।

মুন্সিগঞ্জ পশ্চিম বিভাগের ফরেষ্ট কর্মকর্তা জিয়াউর রহমান গণমাধ্যমেকে বলেন, আমাদের বন বিভাগের টহল টিম সবসময় নজরদারি করছে। বনে প্রবেশ নিষেধাজ্ঞার সময় বন বিভাগের সামনে কাঠ পাচার করছে এমন বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন আমরা বিষয় টি দেখব কোন কর্মকর্তা,ফরেষ্ট গার্ড জড়িত থাকলে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিব। বনদ্যসু নির্মূলে সকল বাহিনী ও প্রশাসন সহযোগিতা করলে আমরা এদের অভিযান করে ধরতে পারব। বনদ্যসু দমন করতে পারবো।