Dhaka , Thursday, 28 August 2025
News Title :
অনলাইন জুয়ায় নিঃস্ব হাজার হাজার যুবক : ঝুঁকছে ভয়ংকর অপরাধে বনবিভাগের সামনেই পাচার হচ্ছে সুন্দরবনের মূল্যবান কাঠ সাতক্ষীরায় চিংড়ীতে জেলী পুশ : ব্যবসায়ীকে লক্ষাধিক টাকা জরিমানা যুবদল নেতা শামীম হত্যার দায়স্বীকার করল স্ত্রী ও শ্যালক সাতক্ষীরায় ব্র্যাকের জলবায়ু পরিবর্তন ও স্বাস্থ্য কর্মশালা অনুষ্ঠিত সাতক্ষীরা অবজার্ভারে সংবাদ প্রকাশে কালিগঞ্জে অভিযানে ১৬ কেজি পুশকৃত বাগদা চিংড়ি জব্দ সাতক্ষীরায় মেরুদণ্ডের জটিল অপারেশন সম্পন্ন কালিগঞ্জে দুর্নীতি প্রতিরোধে সচেতনতায় বিতর্ক, রচনা ও চিত্রাঙ্কন অনুষ্ঠিত যানজটের শহরে পরিণত সাতক্ষীরা শহর : নাকাল জনসাধারণ সুন্দরবনের চর দখল করে রির্সোট : গুঁড়িয়ে দিল প্রশাসন

সাতক্ষীরার হোয়াইট গোল্ডে রমরমা জেলী পুশ : রপ্তানি হুমকির মুখে

বিশেষ প্রতিবেদন:
সাতক্ষীরার হোয়াইট গোল্ড অথাৎ সাদা সোনা নামে পরিচিত চিংড়ী। উপকূলী অঞ্জলের কালিগঞ্জ,শ্যামনগর,ও আশাশুনিতে কয়েক হজাার হেক্টর মৎস্য ঘেরে চিংড়ী চাষ হয়। বিদেশি রপ্তানি করে ভাল দাম পাওয়া এই শিল্পের চাহিদা বৃদ্ধি পেয়েছে।
আগে অতিরিক্ত লবণের কারণে জমিতে ফসল না হওয়ায় জমি অনাবাদি পড়ে থাকত। তবে লাভজনক হওয়ায় কৃষকরা হাজার হাজার হেক্টর ওইসব জমিতেই শুরু করেন চিংড়ি চাষ। কিন্তু ভাইরাসসহ নানা রোগে আক্রান্ত হয়ে মাছ মরে যাওয়া, জীবাণুমুক্ত রেণু পোনা না পাওয়া, চিংড়িতে জেলি পুশের ফলে বাজারে মাছের দাম কমে যাওয়ায় লোকসানের মুখে চাষিরা।

এ অবস্থায় আন্তর্জাতিক বাজারে চিংড়ি শিল্পের সুনাম অক্ষুণ্ন রাখতে জেলি পুশ করা দুর্বৃত্তদের বিরুদ্ধে অভিযান চালালে ও বন্ধ হচ্ছে না। ‘
.
প্রশাসন বলছে, আমরা যখনই জেলি পুশ করা চিংড়ি বাজারজাতের তথ্য পাচ্ছি, তখনই ব্যবস্থা নিচ্ছি। ঘের থেকে শুরু করে গুদাম পর্যন্ত তারা এ ধরনের কাজ যেখানেই করছেন, আমরা সেখানেই অভিযান পরিচালনা করছি।’

বিদেশের বাজারে একসময় একচেটিয়া রাজত্ব ছিল বাংলাদেশের চিংড়ীর। কিন্তু জেলী পুশের কারণে অনেক কন্টেইনার ফেরত এসেছে বাংলাদেশে। এভাবে ঐতিহ্য হারাচ্ছে বাংলাদেশী চিংড়ীর। জেলী পুশ বন্ধ না হলে এই শিল্প রপ্তানিতে ধস নামার আশঙ্কা করেছে বিশ্লেষকরা।

মি. রশিদ জানান, সাধারণত খুলনা, সাতক্ষীরা, বাগেরহাট- যেখানে চিংড়ি উৎপাদিত হয়, সেখানে চিংড়ি ধরে বাজারে আনার আগেই সেগুলোতে এই জেলি পুশ করা হয়। তাই, বাজারে জেলি-যুক্ত চিংড়ি বিক্রি বন্ধ করতে হলে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকেই পদক্ষেপ নিতে হবে।

মূলত ওজন বাড়ানোর জন্যই বিক্রেতারা এমনটা করে বলে জানান মি. রশিদ।

“চিংড়িকে আমরা গুরুত্ব দিচ্ছি কারণ এর আগে রপ্তানির জন্য পাঠানো চিংড়িতে সাগু থাকার কারণে সেটি বাতিল হয়ে গিয়েছিল। সেরকম কিছু যাতে আর না ঘটে,” বলছিলেন মৎস্য কর্মকর্তা মামুনুর রশিদ

খাদ্য ও পুষ্টিবিদরা বলছেন, চিংড়ি মাছের ভেতরে যে জেলি পাওয়া যায় তা পুরোটাই প্লাস্টিক।

এছাড়া সাগু বা অনেক সময় সাদা পাথর এবং ধাতব পদার্থও পাওয়া যায়। আর এগুলো খেলে কিডনি ও পাকস্থলীর জটিলতা তৈরি হতে পারে বলে সতর্ক করেছেন পুষ্টিবিদ ইমদাদ হোসেন শপথ।

সচেতন মহল বলছে, অসাধু ব্যবসায়ীদের আইনের আওতায় এনে বৈদেশিক রপ্তানি শিল্প চিংড়ী মানকে অক্ষুণ্ণ রাখতে হবে।

তিনি বলেন, পাথর এমনিতেই হজম হয় না। সেটা পাকস্থলীতে গিয়ে জমে থাকে। যার কারণে এক ধরনের অস্বস্তি এবং পাকস্থলীর প্রদাহ তৈরি করে।

“জেলির যে কেমিক্যাল সাবস্ট্যান্স সেটা একেবারেই ডাইজেস্ট হবে না। এটা পাকিস্থলীতে থেকে ক্ষতিসাধন করতে পারে এবং এটা কিডনির জন্য ক্ষতিকর।”

তিনি বলেন, খাবারের সাথে যেকোনো অপ্রত্যাশিত বস্তু যা খাবার নয় সেটা থাকাটাই ক্ষতিকর।

চিংড়ি ছাড়াও সাদা পোয়া মাছ লাল করতে লাল রং এবং শিং মাছের রং প্রাকৃতিক বানাতেও এগুলোর সাথে রং মিশ্রিত করা হয় বলে জানান জেলা মৎস্য কর্মকর্তারা।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Satkhira observer

Popular Post

অনলাইন জুয়ায় নিঃস্ব হাজার হাজার যুবক : ঝুঁকছে ভয়ংকর অপরাধে

সাতক্ষীরার হোয়াইট গোল্ডে রমরমা জেলী পুশ : রপ্তানি হুমকির মুখে

Update Time : 11:33 am, Saturday, 23 August 2025

বিশেষ প্রতিবেদন:
সাতক্ষীরার হোয়াইট গোল্ড অথাৎ সাদা সোনা নামে পরিচিত চিংড়ী। উপকূলী অঞ্জলের কালিগঞ্জ,শ্যামনগর,ও আশাশুনিতে কয়েক হজাার হেক্টর মৎস্য ঘেরে চিংড়ী চাষ হয়। বিদেশি রপ্তানি করে ভাল দাম পাওয়া এই শিল্পের চাহিদা বৃদ্ধি পেয়েছে।
আগে অতিরিক্ত লবণের কারণে জমিতে ফসল না হওয়ায় জমি অনাবাদি পড়ে থাকত। তবে লাভজনক হওয়ায় কৃষকরা হাজার হাজার হেক্টর ওইসব জমিতেই শুরু করেন চিংড়ি চাষ। কিন্তু ভাইরাসসহ নানা রোগে আক্রান্ত হয়ে মাছ মরে যাওয়া, জীবাণুমুক্ত রেণু পোনা না পাওয়া, চিংড়িতে জেলি পুশের ফলে বাজারে মাছের দাম কমে যাওয়ায় লোকসানের মুখে চাষিরা।

এ অবস্থায় আন্তর্জাতিক বাজারে চিংড়ি শিল্পের সুনাম অক্ষুণ্ন রাখতে জেলি পুশ করা দুর্বৃত্তদের বিরুদ্ধে অভিযান চালালে ও বন্ধ হচ্ছে না। ‘
.
প্রশাসন বলছে, আমরা যখনই জেলি পুশ করা চিংড়ি বাজারজাতের তথ্য পাচ্ছি, তখনই ব্যবস্থা নিচ্ছি। ঘের থেকে শুরু করে গুদাম পর্যন্ত তারা এ ধরনের কাজ যেখানেই করছেন, আমরা সেখানেই অভিযান পরিচালনা করছি।’

বিদেশের বাজারে একসময় একচেটিয়া রাজত্ব ছিল বাংলাদেশের চিংড়ীর। কিন্তু জেলী পুশের কারণে অনেক কন্টেইনার ফেরত এসেছে বাংলাদেশে। এভাবে ঐতিহ্য হারাচ্ছে বাংলাদেশী চিংড়ীর। জেলী পুশ বন্ধ না হলে এই শিল্প রপ্তানিতে ধস নামার আশঙ্কা করেছে বিশ্লেষকরা।

মি. রশিদ জানান, সাধারণত খুলনা, সাতক্ষীরা, বাগেরহাট- যেখানে চিংড়ি উৎপাদিত হয়, সেখানে চিংড়ি ধরে বাজারে আনার আগেই সেগুলোতে এই জেলি পুশ করা হয়। তাই, বাজারে জেলি-যুক্ত চিংড়ি বিক্রি বন্ধ করতে হলে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকেই পদক্ষেপ নিতে হবে।

মূলত ওজন বাড়ানোর জন্যই বিক্রেতারা এমনটা করে বলে জানান মি. রশিদ।

“চিংড়িকে আমরা গুরুত্ব দিচ্ছি কারণ এর আগে রপ্তানির জন্য পাঠানো চিংড়িতে সাগু থাকার কারণে সেটি বাতিল হয়ে গিয়েছিল। সেরকম কিছু যাতে আর না ঘটে,” বলছিলেন মৎস্য কর্মকর্তা মামুনুর রশিদ

খাদ্য ও পুষ্টিবিদরা বলছেন, চিংড়ি মাছের ভেতরে যে জেলি পাওয়া যায় তা পুরোটাই প্লাস্টিক।

এছাড়া সাগু বা অনেক সময় সাদা পাথর এবং ধাতব পদার্থও পাওয়া যায়। আর এগুলো খেলে কিডনি ও পাকস্থলীর জটিলতা তৈরি হতে পারে বলে সতর্ক করেছেন পুষ্টিবিদ ইমদাদ হোসেন শপথ।

সচেতন মহল বলছে, অসাধু ব্যবসায়ীদের আইনের আওতায় এনে বৈদেশিক রপ্তানি শিল্প চিংড়ী মানকে অক্ষুণ্ণ রাখতে হবে।

তিনি বলেন, পাথর এমনিতেই হজম হয় না। সেটা পাকস্থলীতে গিয়ে জমে থাকে। যার কারণে এক ধরনের অস্বস্তি এবং পাকস্থলীর প্রদাহ তৈরি করে।

“জেলির যে কেমিক্যাল সাবস্ট্যান্স সেটা একেবারেই ডাইজেস্ট হবে না। এটা পাকিস্থলীতে থেকে ক্ষতিসাধন করতে পারে এবং এটা কিডনির জন্য ক্ষতিকর।”

তিনি বলেন, খাবারের সাথে যেকোনো অপ্রত্যাশিত বস্তু যা খাবার নয় সেটা থাকাটাই ক্ষতিকর।

চিংড়ি ছাড়াও সাদা পোয়া মাছ লাল করতে লাল রং এবং শিং মাছের রং প্রাকৃতিক বানাতেও এগুলোর সাথে রং মিশ্রিত করা হয় বলে জানান জেলা মৎস্য কর্মকর্তারা।